চাকমাদের প্রাণের উৎসব বৈসাবি আদিবাসীরা গান ধরে - The Chakma News

চাকমাদের প্রাণের উৎসব বৈসাবি আদিবাসীরা গান ধরে - The Chakma News



প্রাণের উৎসব বৈসাবি। পাহাড়িদের প্রাণের উৎসব ‘বৈসাবি’। বৈসাবি আগমনে পাহাড়ি আদিবাসীরা গান ধরে—‘তুরু তুরু তুরু রু- বাজি বাজাত্তে/পাড়ায় পাড়ায় বেরেবং বেকুন মিলিনে/এচ্যে বিজু, বিজু, বিজু’ ( তুরু তুরু শব্দে বাঁশি বাজে, গ্রামে ঘুরে বেড়াবো সবাই মিলে, আজ বিজু, আজ বিজু।) চাকমারা এ উৎসবকে বিজু, ত্রিপুরা বৈসুক, মারমারা সাংগ্রাইং, তংচঙ্গ্যারা বিষু, অহমিয়ারা বিহু বলে। ত্রিপুরাদের বৈসুক থেকে ‘বৈ’, মারমাদের সাংগ্রাইং থেকে ‘সা’ আর চাকমাদের বিজু থেকে ‘বি’—এভাবে তিনটি নামের আদ্যাক্ষর এক করে হয় ‘বৈ-সা-বি’। তবে অন্যরা নিজ নিজ নামে অভিহিত করে তাদের নিজস্ব উৎসবকে 

বৈসুক:
ত্রিপুরাদের লোকজ উৎসবের মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও প্রধানতম উৎসব হলো বুইসুক বা বৈসুক। চৈত্র মাসের শেষের দুই দিন ও নববর্ষের প্রথম দিনটিতে পালন করা হয় এই উৎসব। চৈত্রের শেষ দুই দিনের প্রথম দিনটিকে
এরা ‘হারিবুইসুক’ আর শেষ দিনটিকে বলে ‘বুইসুকমা’ । আর নববর্ষের প্রথম দিনটিকে বলা হয় ‘বিসিকাতাল’  উৎসবের প্রথম দিন আদিরীতি অনুসারে ত্রিপুরা ছেলেমেয়েরা গাছ থেকে ফুল তোলে, ফুল দিয়ে ঘর সাজায় ও কাপড় ধুয়ে পরিষ্কার করে নেয়। অতঃপর ঝুড়িতে ধান নিয়ে মোরগ-মুরগিকে ছিটিয়ে দেয়। ওইদিন ভালো ও পরিষ্কার কাপড়চোপড় পরে আদিবাসীরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে বেড়ায়। এ সময় ঘরে ঘরে বিচিত্র ধরনের পিঠা আর মদ ও অন্যান্য পানীয় পান করানো হয়। বৈসুক উৎসব শুরু হলে ‘গরাইয়া’ নৃত্যের দল বাড়ি বাড়ি গিয়ে নৃত্য পরিবেশন করে। আনন্দদায়ক এই নৃত্যকে ত্রিপুরারা গরাইয়া নৃত্য বা খেরেবাই নৃত্য বলে । এই লোকনৃত্যে ১৬ থেকে ৫০০ পর্যন্ত লোক অংশ নিতে পারে। ২২টি অসাধারণ মুদ্রা সৃষ্টি করা হয় এ নৃত্যে। নৃত্য শেষে প্রতি বাড়িতেই শিল্পীরা সুর করে ওই গৃহস্থকে আশীর্বাদ করে। তখন সবাইকে মদ, মুরগির বাচ্চা ও চাল তুলে দেওয়া হয়। এভাবে প্রত্যেক বাড়ি থেকে সংগ্রহ করা সামগ্রী দিয়ে গরাইয়া দেবতার পূজা করে এরা। ত্রিপুরাদের আদিবাসী নিয়মে একবার কেউ গরাইয়া নৃত্যে অংশ নিলে, সে তিন বছর পর্যন্ত আর এই নৃত্যে অংশ নিতে পারে না। 

সাংগ্রাইং:
 মারমা বর্ষপঞ্জি অনুসারে মারমা সাল গণনাকে বলা হয় গঃ জাঃ সাকুরাই। ‘তাইংখুং’ মারমা পঞ্জিকা বছরের প্রথম মাস। এ মাসেই উদযাপিত হয় নববর্ষ বরণ অনুষ্ঠান ‘সাংগ্রাইং'। এটি মারমাদের অন্যতম প্রধান সামাজিক উৎসব। মারমারা তাৎপর্যপূর্ণ ও আনন্দের সঙ্গে সাধারণত তিনদিন সাংগ্রাইং উৎসবের অনুষ্ঠানমালা পালন করে। প্রথম দিনটিকে বলে ‘পাইং ছোয়াইক’ । এর শাব্দিক অর্থ ‘ফুল তোলা’। এদিন মারমা যুবতীরা গোলাপ, জবা, গন্ধরাজ, বেলীসহ নানা ধরনের পাহাড়ি সুগন্ধি ফুল সংগ্রহ করে। বুদ্ধ পূজার রাতে সেসব ফুল সাজিয়ে দলবেঁধে ওইদিন ভোরবেলা সবাই বৌদ্ধবিহারে গমন করে। বুদ্ধমূর্তির বেদিতে ভক্তিসহকারে সেই ফুল রেখে তারা প্রার্থনা নিবেদন করে এবং নানা রংয়ের মোম ও ধূপকাঠি জ্বালিয়ে রাখে। উৎসবের আগেই বেদির স্থানটুকু ফুল ও মাল্যে ভরিয়ে দেওয়া হয়। ওইদিন ভোরেই প্রবীণেরা অষ্টশীল গ্রহণ ও উপবাস পালনের জন্য বিছানাপত্রসহ অবস্থান নেয়। বিকেলে মন্দিরের বুদ্ধমূর্তি নিয়ে সব বয়সী মারমারা সারিবদ্ধভাবে গ্রাম প্রদক্ষিণ করে। যারা প্রদক্ষিণরত মিছিলে আসতে পারে না, তারাও ওই সময় কলসভর্তি পানি দিয়ে যে কোনো পথ ধুয়ে পরিষ্কার করে বুদ্ধমূর্তির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে । ওই রাতে মারমা যুবক-যুবতীরা না ঘুমিয়ে গান-বাজনায় ব্যস্ত থাকে। এ সময় তারা নানা পদের ও হরেক রকমের পিঠা-পায়েস তৈরি করে। উৎসবের দ্বিতীয় দিনটিকে মারমারা বলে 'সাংগ্রাইং রাইকু' বা ‘আইক্যা’। এ দিনটি সাংগ্রাইং দেবীর আগমন দিবস। তাই ভোর থেকে রাত অবধি মারমারা নানা আচার পালন করে। ঘরে ঘরে চলে প্রবীণ পূজা। আগত পূজারিকে প্রবীণ গুরুজন কর্তৃক প্রদান করা হয় আশীর্বচন। পূজার্ঘ্যর জন্য কলা, পেঁপে, নারকেল ইত্যাদি রঙিন কাগজে মুড়ে মোমবাতির প্যাকেটসহ তা বুদ্ধ মূর্তির বেদিতে রেখে প্রার্থনা করা হয়। ‘সাংগ্রাইং আপ্যাইন’ হচ্ছে উৎসবের তৃতীয় দিন। এটা দেবীর নির্গমন দিবস। তাই ভোরে মঙ্গলাচরণ ও স্তত্র পাঠ, সকালে অষ্টশীল গ্রহণ ও পিণ্ডদান, বিকেলে গোলাপ ও চন্দনমিশ্রিত জলে বুদ্ধস্নান, সন্ধ্যায় প্রদীপ পূজা এবং রাতের আরতি দানের মধ্য দিয়ে দিবসের সমাপ্তি ঘটে। মারমা সমাজে সাংগ্রাইং উৎসবের উল্লিখিত তিনদিনের অনুষ্ঠান ছাড়াও সামাজিকভাবে কিছু অনুষ্ঠানের প্রচলন রয়েছে। যেমন :

রিলংবোয়ে বা জলকেলি: 
মারমা যুবক-যুবতীদের মধ্যে এ অনুষ্ঠান সামাজিক ঐক্য, সম্প্রীতি, প্রেম- ভালোবাসায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। এ অনুষ্ঠানে যুবতীরা প্যান্ডেলের ভেতরে পানিভর্তি নৌকা বা ড্রামকে পেছনে রেখে সারিবদ্ধভাবে পানির পাত্র হাতে নিয়ে নৌকা বা ড্রামের গা ঘেঁষে বসে থাকে। যুবকেরা বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে নেচে-গেয়ে প্যান্ডেলের দিকে এগোতে থাকে। প্রত্যেকের হাতে থাকে খালি বালতি ও মগ। তারা কমিটির কাছ থেকে নির্ধারিত হারে পানি কিনে প্যান্ডেলের বাইরে পানি নিক্ষেপ স্থানে অবস্থান নেয়। যুবতীরা যুবকদের দিকে পিঠ রেখে উল্টোদিকে ফিরে সারিবদ্ধভাবে নৌকার পাশে বসে কিংবা ড্রামের পেছনে দাঁড়িয়ে থাকে । প্রতিটি যুবক পছন্দানুযায়ী এক একজন যুবতীকে লক্ষ্য করে নির্দিষ্ট স্থান থেকে পিঠের ওপর পানি নিক্ষেপ করে। দু-তিনবার পানি পড়ার পর যুবতীটি উঠে ঘুরে দাঁড়িয়ে যুবকের মুখোমুখি হয়ে নৌকা বা ড্রাম থেকে মগে পানি তুলে যুবকের মুখের দিকে প্রীতি বিনিময়সূচক পানি ছুড়ে
মারে। যুবকের বালতির পানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত উভয়ে পরস্পরের প্রতি এভাবে পানি ছুড়তে থাকে । পানি নিক্ষেপে কোনো ঝগড়া বিবাদ করা যায় না ।  কৌণিক বা আড়াআড়িভাবে পানি নিক্ষেপ নিষেধ থাকে। অনুষ্ঠান চলাকালে কেউ কোনো অশোভন, অশালীন বা অশ্লীল আচরণ করতে পারে না। 

ছোয়াইং ভোজন :
সাংগ্রাইং চলাকালে বিশেষ ছোয়াইং রান্না ও বিতরণ করা হয়। ভাত ও নানা ধরনের তরকারি সহযোগে পৃথকভাবে ক্যারিয়ারে সাজিয়ে যে খাদ্যসামগ্রী বৌদ্ধ ভিক্ষু, শ্রমণ, উপাসক ও গুরুজনদের মধ্যে বিতরণ করা হয়, মারমা ভাষায় তাকেই ছোয়াইং বলা হয় । মাছ, মাংস, ডিম, শাক-সবজি ও ভাত এর প্রধান উপকরণ। 

জাহাজ টানার অনুষ্ঠান:
বিশেষ অনুষ্ঠান পালনের জন্য কাঠের চাকার ওপর বাঁশ, বেত ও রঙিন কাগজ দিয়ে জাহাজ তৈরি করা হয় সাংগ্রাইং উৎসবে। যুবক-যুবতী, কিশোর- কিশোরী, ছোট ছেলেমেয়েরা একত্রিত হয়ে বাদ্যি বাজিয়ে গান গেয়ে প্রধান সড়ক দিয়ে তা টেনে নিয়ে যায় বৌদ্ধবিহার পর্যন্ত। এ সময় অনেকেই মনের নানা ইচ্ছা পূরণের আশা নিয়ে জাহাজের মাঝে মোমবাতি জ্বালিয়ে দেয়। অনেকেই ছুড়ে দেয় টাকা-পয়সা। যা পরবর্তী সাংগ্রাইং-এর খরচের জন্য তুলে রাখা হয় । সাংগ্রাইং-এর শেষে রাতে এটি বিসর্জন দেওয়া হয় নদীতে । 

সাংগ্রাইং-এর মিথ:
সংক্রান্তি শব্দ থেকেই এসেছে ‘সাংগ্রাইং' শব্দটি। এ কারণে অনেকেই মনে করেন চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে সাংগ্রাইং উৎসব পালন করা হয়। তবে মারমারা বিশ্বাস করে, এ পৃথিবীতে সাংগ্রাং নামে এক ধর্মীয় দেবী মানুষের সৌভাগ্য আর কল্যাণ বয়ে নিয়ে আসেন। স্বর্গ থেকে মর্ত্যে দেবী নেমে আসার অর্থাৎ পৃথিবীতে পা রাখার ক্ষণটি থেকেই শুরু হয় সাংগ্রাইং বা নববর্ষ পালনের উৎসব। পৃথিবীতে যে ক'দিন দেবী অবস্থান করবেন সে ক'দিন ধরেই চলে সাংগ্রাইং উৎসব। সাধারণত তিন থেকে পাঁচদিনব্যাপী এ উৎসব পালন করে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মারমারা। 

বিজু:
পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের মধ্যে সংখ্যার দিক থেকে বৃহৎ জনগোষ্ঠী হচ্ছে চাকমারা। বিজু উৎসবের সঙ্গে তাই দুলে ওঠে পুরো পার্বত্য চট্টগ্রাম। চাকমারা বাংলা বর্ষের শেষ দিনটিকে মূলবিজু, তার আগের দিনটিকে ফুলবিজু এবং নববর্ষের প্রথম দিনটিকে নতুন বছর বা ‘গুজ্জেই পজ্জা’ দিন বলে। এ তিনদিন ধরেই এরা বিজু উৎসব পালন করে। ফুলবিজুর দিনে বাড়ির ছেলে মেয়েরা অনেক সময় বয়োবৃদ্ধ পুরুষ মহিলারাও সকালে ঘুম থেকে উঠে বিভিন্ন ফুল তুলে নিজ নিজ বাড়িতে আনে এবং সেগুলো দিয়ে বুদ্ধ পূজা, গৃহ দেবতার পূজা করে থাকে। এ সময় ঘরবাড়ি ও আঙিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে ফুলে ফুলে বাড়িঘর সাজানোর পর পোষা গরু, মহিষ ইত্যাদির গলায় ফুলের মালা পরিয়ে দেওয়া হয়। ফুলবিজুর দিনে গ্রামের সবাই একত্রিত হয়ে পরিকল্পনা করে এবং বন্য জন্তুর মাংস
সংগ্রহের জন্য বনে শিকারে বের হয়। কেউ কেউ মাছ ধরতে যায় নদীতে বা জলাশয়ে। মেয়েরা নানা তরিতরকারি সংগ্রহের জন্য বেরিয়ে পড়ে জঙ্গল ও ক্ষেত-খামারে। এ সময় এরা গন্ধকী, কাটুবের আগা বা মূল, একদাজ্যা কচুর দিগ, কেতকী, গোলাক বেত ও মরিচা বেতের আগা ইত্যাদি সংগ্রহ করে আনে। বিকেলে গোয়ালঘরে, স্নান ঘাটে সুতালি বাতি বা মোম জ্বালিয়ে আলোকসজ্জা করা হয়। সন্ধ্যার পরেই শুরু হয় নানারকম পিঠা বানানো। পরেরদিন খাওয়ার জন্য চাকমারা সান্যাপিঠা, বরাপিঠা, হুগাপিঠা ইত্যাদি
তৈরি করে।

মূল বিজুর দিন প্রতি বাড়ির লোকেরা নারী-পুরুষ, ছেলেমেয়ে নির্বিশেষে খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠেই নদীতে বা জলাশয়ে স্নান সেরে নেয়। অতঃপর দলে দলে নদী, পাহাড়ি ছড়া বা জলাশয়ে ফুল ভাসিয়ে দিয়ে চাকমারা পুরনো বছরের গ্লানি ভুলে নতুন বছরকে স্বাগত জানায়। মেয়েরা স্নান সেরে এসে ফুল বিজুর দিনে সংগ্রহ করা প্রায় ২০ রকমের শাকসবজি দিয়ে প্রতিটি ঘরেই রান্না করে ‘পাঁচন’ নামক এক ধরনের ঐতিহ্যবাহী খাবার। অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে আগতদের তা খেতে দেয়া হয়। যুবতী মেয়েরা বাড়ির বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের নদী বা জলাশয় থেকে পানি এনে নিজ হাতে স্নান করায় । ছোট ছেলেমেয়েরা নতুন কাপড় পরে ‘কুরুম’ বা ছোট বেতের ‘টুরং' (ঝুড়ি)-এ ধান নিয়ে দলে দলে প্রতি বাড়িতে গিয়ে মোরগ-মুরগি ও হাঁসের খাওয়ার জন্য উঠানে ধান ছিটিয়ে দেয়। এ সময় বাড়ির লোকেরা তাদের পিঠা, পাঁচন ইত্যাদি খেতে দেয়। এভাবে তারা গোটা গ্রাম ঘুরে বেড়ায়। তবে বর্তমানে এ আচারটি চাকমা সমাজ থেকে প্রায় লুপ্ত হওয়ার পথে। ‘গুজ্জেই পজ্জা’র দিন বা তৃতীয় দিন বা নববর্ষের প্রথম দিন চাকমারা দল বেঁধে উপাসনালয়ে গিয়ে নতুন বছরের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে । গ্রাম্য ছেলেমেয়েরা এ দিনটি গিলাখেলা, গুদু (হাডুডু) খেলাসহ বিভিন্ন খেলাধুলা ও আমোদের মধ্যে অতিবাহিত করে। যুবক-যুবতীরা মহানন্দে আকাশ প্রদীপ জ্বালায় এবং বাজি ফোটায়। এদিন তারা গ্রাম থেকে বাইরে যায় না। সন্ধ্যার প্রতিঘর, ক্যাংঘর, স্নানঘাট, গরু-মহিষের ঘরে আলোকসজ্জা করা হয়। মূল বিজু বা বৎসরের শেষ দিনে নানা ধরনের পানীয় ও উত্তম খাদ্যদ্রব্য খাওয়া হয়। তাই এর পরদিন নববর্ষের প্রথম দিনে বিশ্রাম নেওয়া হয়। এ কারণেই এ দিনটিকে ‘গুজ্জেই পজ্জার দিন অর্থাৎ শুয়ে থাকার দিন বলা হয়।


Thank You For The read post
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url